ঢাকা ০৪:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি: প্রতিশ্রুতির পথে এক নতুন যাত্রা

  • আপডেট সময় : ০৫:৩২:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে

ইসলামপুর প্রতিনিধি, জামালপুর

ইসলামপুরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও বঞ্চনার ইতিহাস বহন করে আসছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা কিংবা কর্মসংস্থান—সব ক্ষেত্রেই এখানে পিছিয়ে পড়ার অভিযোগ শোনা যায় বহুদিন ধরে। ঠিক এই প্রেক্ষাপটে, স্থানীয়দের আশা ও প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে গড়ে উঠল “ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি”।

প্রতিশ্রুতি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ:

সাম্প্রতিক নির্বাচনে ইসলামপুরের জনগণের কাছে যে ব্যক্তি তাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছিলেন, তিনি এখন সেই প্রতিশ্রুতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ঘোষিত সাত দফা উন্নয়ন কর্মসূচির ভিত্তিতেই কমিটির কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।

এই কর্মসূচিগুলির মধ্যে রয়েছে—

শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ,

কৃষক ও উৎপাদনমুখী খাতকে সহায়তা,

সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ,

কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি,

দুর্নীতি ও বৈষম্য দূরীকরণ,

অসহায় ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা,

অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলা।

প্রতিষ্ঠাতার বক্তব্য:

কমিটির প্রতিষ্ঠাতা বলেন,

“আমার প্রতিটি প্রতিশ্রুতি ছিল ইসলামপুরবাসীর বাস্তব সমস্যার সঙ্গে সংযুক্ত। আজ আমরা কমিটির মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের পথে হাঁটছি। উন্নয়ন কোনো একক কাজ নয়, এটি হবে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে।”

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া:

গ্রামের কৃষক আজিজুল হক বলেন,

“আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কৃষিতে লোকসান। যদি এই কমিটির মাধ্যমে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম আর প্রশিক্ষণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”

অন্যদিকে স্থানীয় স্কুলশিক্ষিকা রুবিনা আক্তার আশা প্রকাশ করেন,

“ছেলেমেয়েদের জন্য ভালো শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হলে ইসলামপুরের ভবিষ্যৎই বদলে যাবে।”

বিশেষজ্ঞদের মতামত:

স্থানীয় সমাজকর্মীরা মনে করেন, ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি যদি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে কাজ করে, তাহলে এটি হতে পারে এক অনন্য মডেল।
সমাজবিজ্ঞানী ড. আরিফ হোসেন বলেন,

“বাংলাদেশের অনেক এলাকায় উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি থেকে কখনো বাস্তবে আসে না। ইসলামপুরের এই উদ্যোগ যদি ধারাবাহিকভাবে এগোয়, তবে এটি অন্য এলাকাকেও অনুপ্রাণিত করবে।”

চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা:

তবে উন্নয়ন যাত্রা সহজ হবে না। অর্থনৈতিক সংকট, সরকারি সহায়তার অভাব এবং রাজনৈতিক বাধা—সব মিলিয়ে কমিটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কিন্তু স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকলে এই কমিটি ইসলামপুরের ইতিহাস পাল্টে দিতে পারবে।

ভবিষ্যতের রূপরেখা:

ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি ইতিমধ্যে স্থানীয় স্তরে সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে। আগামী মাসে তারা শিক্ষা ও কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক দুটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে লক্ষ্য হলো ইসলামপুরকে একটি অগ্রসর, স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি: প্রতিশ্রুতির পথে এক নতুন যাত্রা

আপডেট সময় : ০৫:৩২:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইসলামপুর প্রতিনিধি, জামালপুর

ইসলামপুরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও বঞ্চনার ইতিহাস বহন করে আসছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা কিংবা কর্মসংস্থান—সব ক্ষেত্রেই এখানে পিছিয়ে পড়ার অভিযোগ শোনা যায় বহুদিন ধরে। ঠিক এই প্রেক্ষাপটে, স্থানীয়দের আশা ও প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে গড়ে উঠল “ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি”।

প্রতিশ্রুতি থেকে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ:

সাম্প্রতিক নির্বাচনে ইসলামপুরের জনগণের কাছে যে ব্যক্তি তাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছিলেন, তিনি এখন সেই প্রতিশ্রুতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ঘোষিত সাত দফা উন্নয়ন কর্মসূচির ভিত্তিতেই কমিটির কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।

এই কর্মসূচিগুলির মধ্যে রয়েছে—

শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ,

কৃষক ও উৎপাদনমুখী খাতকে সহায়তা,

সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ,

কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি,

দুর্নীতি ও বৈষম্য দূরীকরণ,

অসহায় ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা,

অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলা।

প্রতিষ্ঠাতার বক্তব্য:

কমিটির প্রতিষ্ঠাতা বলেন,

“আমার প্রতিটি প্রতিশ্রুতি ছিল ইসলামপুরবাসীর বাস্তব সমস্যার সঙ্গে সংযুক্ত। আজ আমরা কমিটির মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের পথে হাঁটছি। উন্নয়ন কোনো একক কাজ নয়, এটি হবে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে।”

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া:

গ্রামের কৃষক আজিজুল হক বলেন,

“আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো কৃষিতে লোকসান। যদি এই কমিটির মাধ্যমে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম আর প্রশিক্ষণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”

অন্যদিকে স্থানীয় স্কুলশিক্ষিকা রুবিনা আক্তার আশা প্রকাশ করেন,

“ছেলেমেয়েদের জন্য ভালো শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হলে ইসলামপুরের ভবিষ্যৎই বদলে যাবে।”

বিশেষজ্ঞদের মতামত:

স্থানীয় সমাজকর্মীরা মনে করেন, ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি যদি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে কাজ করে, তাহলে এটি হতে পারে এক অনন্য মডেল।
সমাজবিজ্ঞানী ড. আরিফ হোসেন বলেন,

“বাংলাদেশের অনেক এলাকায় উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি থেকে কখনো বাস্তবে আসে না। ইসলামপুরের এই উদ্যোগ যদি ধারাবাহিকভাবে এগোয়, তবে এটি অন্য এলাকাকেও অনুপ্রাণিত করবে।”

চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা:

তবে উন্নয়ন যাত্রা সহজ হবে না। অর্থনৈতিক সংকট, সরকারি সহায়তার অভাব এবং রাজনৈতিক বাধা—সব মিলিয়ে কমিটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কিন্তু স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকলে এই কমিটি ইসলামপুরের ইতিহাস পাল্টে দিতে পারবে।

ভবিষ্যতের রূপরেখা:

ইসলামপুর উন্নয়ন কমিটি ইতিমধ্যে স্থানীয় স্তরে সচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করেছে। আগামী মাসে তারা শিক্ষা ও কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক দুটি প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে লক্ষ্য হলো ইসলামপুরকে একটি অগ্রসর, স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।