ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউসিবিএল এর চেয়ারম্যানের অর্থপাচার এর তদন্ত করছে সি আই ডি

  • আপডেট সময় : ০৭:২৭:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫ ১১৮ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি:
অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির এবং তার পরিবারের সদস্যদের অর্থপাচার এর তদন্ত করছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
জানা যায়, অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরীফ জহিরের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তে ২০২৪ সালের মে মাসে দুদক অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চায়। অনন্ত গ্রুপের শরীফ জহিরের অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে গত বছরের ৭ মে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের মানিলন্ডারিং বিভাগের পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরও বলা হয়, শরীফ জহিরের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, বিদেশে অফশোর কোম্পানি খুলে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর ফাঁকি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ বছর ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) এর অর্গানাইজড ক্রাইম-ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের কাছে তদন্ত সহযোগিতা চায়।
মানি লন্ডারিং বিধিমালা-২০১৯ মোতাবেক শরীফ জহির ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা ও বিদেশে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে , ভাই-বোন, মা ও শ্বশুর-শাশুড়ি। সি আই ডি তদন্তের প্রয়োজনে এদের সকলের নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি চেয়েছে। সি আইডি শরীফ জহিরের পরিবারের সদস্যদের (স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে) দেশী বিদেশী পাসপোর্টের কপি চেয়েছে। এর বাইরে শরীফ জহিরের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এর ঠিকানা সম্বলিত তালিকা চেয়েছে। স্বার্থ সংশ্লিষ্ট (স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, মা) ও প্রতিষ্ঠানের বিগত ১০ বছরের ট্যাক্স ফাইলের সত্যায়িত কপি চেয়েছে সি আই ডি।
এছারাও দেশের বাইরে শরীফ জহির বা তার প্রতিষ্ঠানের কোন বিনিয়োগ থাকলে, বিনিয়োগ/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থাকলে সে সংক্রান্ত সকল রেকর্ড পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি চেয়েছে সি আইডি। বিদেশে বিনিয়োগ করে থাকলে সে সংক্রান্তে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে কি না? অনুমোদন নেয়া হলে সে সংক্রান্ত সকল রেকর্ড পত্রের সত্যায়িত কপিও জমা দিতে হবে সি আইডির কাছে।
ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম, অর্গানাইজড ক্রাইম , সি আই ডি থেকে পত্রের মাধ্যমে তথ্য চেয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান শরীফ জহিরের কাছে। যেখানে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এই তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রাদানে বিলম্ব ,অসহযোগিতা বা অস্বীকৃতি জানালে মানিলন্ডারিং আইন ২০১২(সংশোধনী-২০১৫) এর ৭(২) ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর বর্তাবে।
উল্লেখ্য, অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহিরের বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। বহুল আলোচিত পানামা পেপারসে উল্লেখ করা বড় পাচারকারীদের তালিকায় কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদের পাশাপাশি শরিফ জহিরের নামও ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পানামা পেপারসে নাম আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুনীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের তদন্ত শুরু করেছিল। তবে ওই তদন্ত কখনোই তেমন গতি পায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ইউসিবিএল এর চেয়ারম্যানের অর্থপাচার এর তদন্ত করছে সি আই ডি

আপডেট সময় : ০৭:২৭:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি:
অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির এবং তার পরিবারের সদস্যদের অর্থপাচার এর তদন্ত করছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
জানা যায়, অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরীফ জহিরের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তে ২০২৪ সালের মে মাসে দুদক অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করে এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চায়। অনন্ত গ্রুপের শরীফ জহিরের অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে গত বছরের ৭ মে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের মানিলন্ডারিং বিভাগের পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরও বলা হয়, শরীফ জহিরের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, বিদেশে অফশোর কোম্পানি খুলে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর ফাঁকি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ বছর ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) এর অর্গানাইজড ক্রাইম-ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের কাছে তদন্ত সহযোগিতা চায়।
মানি লন্ডারিং বিধিমালা-২০১৯ মোতাবেক শরীফ জহির ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা ও বিদেশে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে , ভাই-বোন, মা ও শ্বশুর-শাশুড়ি। সি আই ডি তদন্তের প্রয়োজনে এদের সকলের নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি চেয়েছে। সি আইডি শরীফ জহিরের পরিবারের সদস্যদের (স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে) দেশী বিদেশী পাসপোর্টের কপি চেয়েছে। এর বাইরে শরীফ জহিরের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এর ঠিকানা সম্বলিত তালিকা চেয়েছে। স্বার্থ সংশ্লিষ্ট (স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, মা) ও প্রতিষ্ঠানের বিগত ১০ বছরের ট্যাক্স ফাইলের সত্যায়িত কপি চেয়েছে সি আই ডি।
এছারাও দেশের বাইরে শরীফ জহির বা তার প্রতিষ্ঠানের কোন বিনিয়োগ থাকলে, বিনিয়োগ/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থাকলে সে সংক্রান্ত সকল রেকর্ড পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি চেয়েছে সি আইডি। বিদেশে বিনিয়োগ করে থাকলে সে সংক্রান্তে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে কি না? অনুমোদন নেয়া হলে সে সংক্রান্ত সকল রেকর্ড পত্রের সত্যায়িত কপিও জমা দিতে হবে সি আইডির কাছে।
ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম, অর্গানাইজড ক্রাইম , সি আই ডি থেকে পত্রের মাধ্যমে তথ্য চেয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান শরীফ জহিরের কাছে। যেখানে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এই তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রাদানে বিলম্ব ,অসহযোগিতা বা অস্বীকৃতি জানালে মানিলন্ডারিং আইন ২০১২(সংশোধনী-২০১৫) এর ৭(২) ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর বর্তাবে।
উল্লেখ্য, অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহিরের বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। বহুল আলোচিত পানামা পেপারসে উল্লেখ করা বড় পাচারকারীদের তালিকায় কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদের পাশাপাশি শরিফ জহিরের নামও ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পানামা পেপারসে নাম আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুনীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের তদন্ত শুরু করেছিল। তবে ওই তদন্ত কখনোই তেমন গতি পায়নি।